অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রস্তুত
শিগগির উচ্ছেদ অভিযানে নামছে সওজ
- আপলোড সময় : ০৫-১১-২০২৪ ১০:৪৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৫-১১-২০২৪ ১০:৪৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
পীর জুবায়ের ::
সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দু’পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে শত কোটি টাকার জায়গা উদ্ধারে শিগগির অভিযানে নামছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, সুনামগঞ্জ। ইতোমধ্যে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তালিকা অনুসারে শিগগির অভিযান শুরু হবে।
জানা গেছে, বছরের পর বছর সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ট্রাফিক পয়েন্ট থেকে গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত সড়ক ও জনপথের শত কোটি টাকার জায়গা দখল রেখেছে প্রভাবশালীরা। মহাসড়কের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দোকানপাট, দালানকোঠা, টিনশেড মার্কেট এবং গাড়ির স্ট্যান্ড তৈরি করে এসব জায়গা দখল করে রাখা হয়েছে। এসব স্থাপনা থেকে দখলদাররা আদায় করছেন ভাড়া।
তথ্য বলছে, সওজ’র জায়গায় নির্মিত অবৈধ স্থাপনা থেকে প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকা ভাড়া আদায় করে থাকেন দখলদাররা। এজন্য প্রতি বছর উচ্ছেদ অভিযান হলেও ফের দখল হয়ে যায় জায়গা।
সওজ সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের সবচেয়ে ব্যস্ততম পয়েন্টগুলো হচ্ছে ট্রাফিক পয়েন্ট, জাউয়াবাজার, গোবিন্দগঞ্জ, পাগলা বাজার, ছাতক বাজার, জগন্নাথপুর বাজার পয়েন্টের অংশ। এই পয়েন্টগুলোর উভয়পাশে সওজ’র মূল্যবান জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে মার্কেট এবং দোকানপাট। এছাড়াও দিরাই, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জেও সড়কের জায়গা বেদখল রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের পুরাতন বাস স্ট্যান্ড থেকে ওয়েজখালি পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে গড়ে ওঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সড়কের জায়গা দখল করে চলছে গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ডের কার্যক্রম। তাছাড়া নীলপুর বাজার, দিরাই রাস্তা, শান্তিগঞ্জ বাজার, পাগল বাজার, জাউয়াবাজার এবং গোবিন্দগঞ্জ বাজারেও চলছে একই অবস্থা। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা।
এদিকে, বছরের পর বছর ধরে এসব জায়গা দখলের এই মহোৎসব চললেও এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। মাঝে মধ্যে দখলদারদের নোটিশ দিলেও প্রভাবশালী দখলদাররা তা আমলে নেয়নি। তাছাড়া উচ্ছেদ অভিযানে গেলে পড়তে হয়েছে নানা বাধার সম্মুখীন। তবে এবার অবৈধ দখলদারদের তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকা অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযানে নামবে কর্তৃপক্ষ।
সওজ’র জায়গা দখল বিষয়ে বিশিষ্টজনেরা বলছেন, এসব অবৈধ স্থাপনা রাতারাতি গড়ে ওঠে না। সওজের লোকজনের চোখের সামনেই সেগুলো বহুদিন ধরে গড়ে ওঠেছে। মাঝেমধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়, কিন্তু কিছুদিন পরেই আবার সেগুলো গড়ে ওঠে। এটাও ঘটে সওজের লোকজনের জ্ঞাতসারেই।
হাউস’র নির্বাহী পরিচালক সালেহিন চৌধুরী শুভ বলেন, সওজ'র জায়গা দখলমুক্ত করা এখন জরুরি। কারণ এসব জায়গা দখল করে প্রভাবশালীরা কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এর পিছনে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে সওজ দায়ি। তা-না হলে উচ্ছেদ হওয়ার পর আবার দখল হয় কিভাবে? তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক সময় খবর পাই- সওজ যখন উচ্ছেদ অভিযানের নোটিশ প্রদান করে তখন দখলদারেরা সিরিয়েল ধরে এসে ধর্না দেয়। আর এই ধর্নার সুফলের দেখা মিলে উচ্ছেদ অভিযানের দিন। তখন লক্ষ করবেন নাম কাওয়াস্তে উচ্ছেদ করা হয়।
অবৈধ দখলদার এবং দখল থেকে জায়গা উদ্ধার স¤পর্কে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, মূল্যবান জায়গা উদ্ধারে আমরা প্রতি বছর অভিযান পরিচালনা করে থাকি। তাছাড়া যারাই দখল করে আছে সেসকল অবৈধ দখলদারদের কেউ ছাড় পাবে না। তাদের কাছ থেকে জায়গা উদ্ধারের জন্য আমরা তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। তালিকা অনুসারে খুব শিগগির অভিযান শুরু হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ